ঢাকা ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব বেড়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২০
  • ২১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস পালিত হয় প্রতিবছরের ৫ ডিসেম্বর। ১৯৮৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের অধিবেশনে সারা বিশ্বে স্বেচ্ছাসেবীদের অবদানের কথা সর্বত্র তুলে ধরা, যে কোনো দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব তুলে ধরে নাগরিকদের স্বেচ্ছাসেবায় আগ্রহী করে তোলার উদ্দেশ্যে এ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সমাজে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের একে অপরের সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন। মানুষ সব সময় অপরকে সহযোগিতা করতে চায়। এটি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। তবে একা সহযোগিতা করার চেয়ে কয়েকজন সমমনা ব্যক্তি একত্রিত হয়ে যখন কোনো কাজ করে তখন তা অতি সহজ হয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে মহামারী করোনাভাইরাসের থাবায় সারা বিশ্ব যখন আক্রান্ত, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যখন ব্যাহত হচ্ছে, তখন মানবতার সেবায় বিশ্বব্যাপী উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনায় কাজ হারানো দুস্থ, অসহায় পরিবারের আলোকবর্তিকা হয়ে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন দেশের স্বেচ্ছাসেবকরা। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে, ক্রান্তিকালে এবং নানাবিধ সচেতনতা সৃষ্টিতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন উদ্দেশ্য সামনে রেখে সংঘবদ্ধ হয়ে মানুষ স্বেচ্ছায় নানা ধরনের সংগঠন গড়ে তোলে। স্বেচ্ছায় রক্তদান, আর্থিক সহায়তা প্রদান, নিরক্ষরদের অক্ষরজ্ঞান প্রদান, গ্রামের কৃষকদের পরামর্শ প্রদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক লক্ষ্যে অনেক সামাজিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। সাধারণত দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সামাজিক সংগঠনের ব্যাপক কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়। তবে বর্তমানে দেশে বিভিন্ন গ্রাম, শহর, জেলা বা অঞ্চলকেন্দ্রিক নানা লক্ষ্যের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে উঠছে। তরুণরা মানবতার সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছে, এটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এসব সংগঠনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে উপযুক্ত কর্মী বা সদস্য প্রয়োজন। একটি লক্ষ্যে কখনোই পৌঁছানো সম্ভব নয়, যতক্ষণ-না কোনো সংগঠনের সদস্যরা ওই সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজেদের সম্পূর্ণরূপে দক্ষ ও পরিপূর্ণরূপে নিবেদিত করে। যদিও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবায় এগিয়ে আসে, তবুও তাদের মাঝে কিছু বৈশিষ্ট্য কাম্য। নয়তো এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং গতিশীলতা হারিয়ে যায়। কোনো সংগঠনের সদস্যরা যদি ওই সংগঠনের গঠনতন্ত্র-নিয়মনীতি মেনে না চলেন, তবে সেই সংগঠন দ্রুতই খেই হারিয়ে ফেলে। যদিও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে সামাজিক উন্নয়ন কাজে বিশেষ অবদান রাখার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের স্বীকৃতস্বরূপ বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে; তবে এ ধরনের স্বীকৃতি আরও বাড়ানো উচিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বেচ্ছাসেবকদের মূল্যায়ন করতে হবে। এতে একদিকে ভালো কাজের যেমন স্বীকৃতি মিলবে, অপরদিকে অন্যরাও উৎসাহী হবে। ‘তুমি ভালো, সে ভালো, আমি আরও ভালো হতে চাই’-এই মধুর প্রতিযোগিতা সমাজে সৃষ্টি হোক। ভালোর সঙ্গে ভালোর প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়ে প্রতিহিংসা নামক শব্দটি মুছে গিয়ে মানবতার জয় হোক-‘আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসে’-এটিই প্রত্যাশা।

মো. আখতার হোসেন আজাদ : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

করোনায় স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব বেড়েছে

আপডেট টাইম : ১০:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস পালিত হয় প্রতিবছরের ৫ ডিসেম্বর। ১৯৮৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের অধিবেশনে সারা বিশ্বে স্বেচ্ছাসেবীদের অবদানের কথা সর্বত্র তুলে ধরা, যে কোনো দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্ব তুলে ধরে নাগরিকদের স্বেচ্ছাসেবায় আগ্রহী করে তোলার উদ্দেশ্যে এ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সমাজে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের একে অপরের সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন। মানুষ সব সময় অপরকে সহযোগিতা করতে চায়। এটি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। তবে একা সহযোগিতা করার চেয়ে কয়েকজন সমমনা ব্যক্তি একত্রিত হয়ে যখন কোনো কাজ করে তখন তা অতি সহজ হয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে মহামারী করোনাভাইরাসের থাবায় সারা বিশ্ব যখন আক্রান্ত, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যখন ব্যাহত হচ্ছে, তখন মানবতার সেবায় বিশ্বব্যাপী উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনায় কাজ হারানো দুস্থ, অসহায় পরিবারের আলোকবর্তিকা হয়ে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন দেশের স্বেচ্ছাসেবকরা। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে, ক্রান্তিকালে এবং নানাবিধ সচেতনতা সৃষ্টিতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন উদ্দেশ্য সামনে রেখে সংঘবদ্ধ হয়ে মানুষ স্বেচ্ছায় নানা ধরনের সংগঠন গড়ে তোলে। স্বেচ্ছায় রক্তদান, আর্থিক সহায়তা প্রদান, নিরক্ষরদের অক্ষরজ্ঞান প্রদান, গ্রামের কৃষকদের পরামর্শ প্রদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক লক্ষ্যে অনেক সামাজিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। সাধারণত দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সামাজিক সংগঠনের ব্যাপক কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়। তবে বর্তমানে দেশে বিভিন্ন গ্রাম, শহর, জেলা বা অঞ্চলকেন্দ্রিক নানা লক্ষ্যের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে উঠছে। তরুণরা মানবতার সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছে, এটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এসব সংগঠনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে উপযুক্ত কর্মী বা সদস্য প্রয়োজন। একটি লক্ষ্যে কখনোই পৌঁছানো সম্ভব নয়, যতক্ষণ-না কোনো সংগঠনের সদস্যরা ওই সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজেদের সম্পূর্ণরূপে দক্ষ ও পরিপূর্ণরূপে নিবেদিত করে। যদিও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবায় এগিয়ে আসে, তবুও তাদের মাঝে কিছু বৈশিষ্ট্য কাম্য। নয়তো এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং গতিশীলতা হারিয়ে যায়। কোনো সংগঠনের সদস্যরা যদি ওই সংগঠনের গঠনতন্ত্র-নিয়মনীতি মেনে না চলেন, তবে সেই সংগঠন দ্রুতই খেই হারিয়ে ফেলে। যদিও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে সামাজিক উন্নয়ন কাজে বিশেষ অবদান রাখার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের স্বীকৃতস্বরূপ বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে; তবে এ ধরনের স্বীকৃতি আরও বাড়ানো উচিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় স্বেচ্ছাসেবকদের মূল্যায়ন করতে হবে। এতে একদিকে ভালো কাজের যেমন স্বীকৃতি মিলবে, অপরদিকে অন্যরাও উৎসাহী হবে। ‘তুমি ভালো, সে ভালো, আমি আরও ভালো হতে চাই’-এই মধুর প্রতিযোগিতা সমাজে সৃষ্টি হোক। ভালোর সঙ্গে ভালোর প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়ে প্রতিহিংসা নামক শব্দটি মুছে গিয়ে মানবতার জয় হোক-‘আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসে’-এটিই প্রত্যাশা।

মো. আখতার হোসেন আজাদ : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া